বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর।
তিনি জানান, আন্দোলন দমনে ৩ লাখ ৫ হাজার ১১ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছিল পুলিশের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে শুধু রাজধানী ঢাকাতেই ব্যবহার করা হয় ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড গুলি।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এ চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ তথ্য উপস্থাপন করেন আলমগীর। প্যানেলের অন্য সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
তিনি জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আন্দোলন দমনে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলির হিসাব সংবলিত ২২৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন তার হাতে আসে। প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে—এলএনজি, চাইনিজ রাইফেল, শর্টগান, রিভলভার ও পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তিনি পেয়েছেন, যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হত্যা ও নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া র্যাব সদর দপ্তর থেকে হেলিকপ্টার ব্যবহারের প্রতিবেদন তিনি পান গত ১৪ জানুয়ারি এবং ৮১টি অজ্ঞাত লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করেন গত ৭ মে।
তার বক্তব্যে উঠে আসে, পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে শান্তিপূর্ণ ছাত্রজনতার ওপর ব্যাপক মাত্রায় প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) আলমগীরের প্রথম দিনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। সোমবার দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে তা অসমাপ্ত রেখে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করা হয়।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
নতুন বাংলাদেশ গড়তে কারও দাসত্ব নয়, স্বনির্ভর হতে হবে: ড. ইউনূস
এখন মন খারাপ হয় না পলকের, লড়তে চান ভোটে
টিএফআই সেলে গুম : প্রধান আসামি শেখ হাসিনা